চারিদিকে বর্তমানের দেয়াল

প্রিয়ার চাহনি (মে ২০১২)

হেলাল মুহাম্মদ
  • ২২
  • ৪১
চারিদিকে বর্তমানের দেয়াল; মাথা তুলে আমি তবু দেখি
এই শীতে পৃথিবীর অপরূপ রূপ। ওপাশে কৃষ্ণ চূড়া-মাখি
ছায়া তার, ঝরে পাতা সারাদিন-আমার দেহের ’পর।
দেখি আকাশে বকের ঝাঁক, - সুদূর সাইবেরিয়া
থেকে হয়ত; শরীরে হিমের ঘ্রাণ কেড়ে ডানা ঝাপটিয়া
এরা উড়ে অবিরাম; এসেছে পেরিয়ে যদি হাকালুকি হাওর
সুরমা, কুশিয়ারা, ছেড়ে জাহাঙ্গীরনগর-
যায় কোথা! না কি খোঁজে মুহুরির চর?
শীতোষ্ণ রোদ যেথা পালকের পর!

চারপাশে প্রকৃতির কি যে দাপাদাপি! সব টের পাই-
আজ যে শালিক পাখি ডাক ছাড়ে নাই
প্রথম প্রহরে-সেও তো ফেলিনি হারায়ে এই কুয়াশায়;
মুয়ায্যিনের আজানের দিয়েছি জবাব ঠিক; নির্জন রাস্তায়
ছন্নছাড়া কোন গেয়েছিল গান মাঝরাতে; থেকে থেমে দূরে
নিঃসহ কুকুর এক কেঁদেছিল কী করুণ সুরে;
তারপর থেকে থেকে প্রহরীর হাঁক-এইসব যত কলরব
আমি কান পেতে শুনেছি সব,-
তৃষিত হৃদয় আমার; চারিদিকে পৃথিবীর এত উৎসব!

যে রিকশাওয়ালাটি টুংটুং করে
ফেরে প্রতি শেষ রাতে,-ভাবি সেও কি শান- হয় এইসব স্বরে?
ঘণ্টার ঘোরে দেখে বুঝি ফেলে আসা গ্রামখানি? আহা, কত বা
বয়স তার! আনমনে পেন্সিলে ছবি এঁকে দেখি-পঁচিশ, অথবা
ত্রিশ, অথবা হয় হোক চল্লিশের ’পর; ধান-কাটা হাসি তার
অমলিন-ক্রও কি হয়েছে ক্ষীণ এই শীতে, জীবনের ভার
সীমাহীন করেছে কি ক্লান্ত - তারে
এই ক্ষমাহীন নগরের ভিড়ে?
কুয়াশায় তাই সে আশা খেঁজে যন্ত্রের সুরের!

অথবা ওই যে পাতাকুড়ানির দল-
সেই ভোরবেলাতেই শোরগোল, হাসিখুশি, করে খুব কোলাহল
ওরা রাস্তাজুড়ে। তখনও আধো গুমে আমি; বুঁজে নিয়ে চোখ
নিমেষেই ভিড়ি গিয়ে দলে! শ্যামল এক কিশোরীর মায়াভরা মুখ
দেখে নিজেকে কিশোর ভ্রমি; আমাকে পায় না টের
যদিওবা কেউ-আমি আর কী করি? খুঁজে-পেতে ঢের
ক’গাছি সেগুন পাতা আর কড়ইয়ের ডাল তুলে দিয়ে
এসে বসি কিশোরীর পাশে; তার ধূলোভরা লাল চুল ছুঁয়ে
ভাবি, দিবে কি কেউ কোনোদিন এরে ভালবাসা ধুঁয়ে!

এইসব কল্পনার ভীড়ে
ভুলেছি কি পথ চাওযা মোর বধূটিরে
জল-ভার বেশ তার, সকরুন চোখ; সময়ের ঘুড়ি
ছুঁড়ে কি দিয়েছে তারে বিস্মৃতির পুরী?
হারায়েছি চিরতরে? না, না, ফেলি কি হারায়ে
সেই বোধগ্রাসী প্রেম! আছে তো জড়ায়ে
তার যত মুখস্পর্শ, আছে তো ছড়ায়ে
অঙ্গে সুতীব্র সুবাস,
এখনো স্বপ্নে হায়, নিত্য বসবাস!

শুধু, এই নিদারুণ বর্তমান ঘুমে
রেখেছি লুকায়ে সব; এত যে প্রণয়খেলা সেই কোন কবে-
ভুলি নাই কিছু তার, পৃথিবীর বিচিত্র বৈভবে
রেখেছি সরায়ে শুধু-দু:সহ সুখস্মৃতি-সুখস্বপ্ন ভ্রমে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সুমন দাস মুন্না ভুলি নাই কিছু তার, পৃথিবীর বিচিত্র বৈভবে রেখেছি সরায়ে শুধু-দু:সহ সুখস্মৃতি-সুখস্বপ্ন ভ্রমে।- সুন্দর
ম্যারিনা নাসরিন সীমা এক কথায় অসাধারন ! না পড়লে মিস করতাম ! অনেক শুভকামনা !
সূর্য দারুন, সুন্দর কবিতা।
মিলন বনিক সুন্দর কবিতা..অন্যরকম একটা আমেজ..ভালো লাগা জড়িয়ে আছে..শুভ কামনা....
ঈশান আরেফিন এখন পর্যন্ত এই সংখ্যায় দেখা অন্যতম মাধুর্যময় কবিতা.........
আহমেদ সাবের অসাধারণ কবিতা। যদিও জীবনানন্দের কিছুটা ছায়া আছে, তবুও কবির স্বতন্ত্র লক্ষণীয়। আশা করব, কবি পরিপূর্ণ নিজস্ব আলোয় আলোকিত হয়ে উঠবেন ধীরে ধীরে। এমন চমৎকার একটা কবিতায় পাঠকশূন্যতা অবশ্যই পীড়াদায়ক।
আসিফ আবরার ওল্ড স্কুল ধারায় রচিত। তবে ভালো।
রোদের ছায়া আপনার লেখা নাকি জীবনানন্দের আমিতো দ্বিধায় পড়ে গেলাম ! আপনার হলে খুবই ভালো , ভীষণ ভালো ......
বশির আহমেদ জীবনান্দীয় ধারার কবিতা বেশ ভাল লাগল ।
আদিল শুধু, এই নিদারুণ বর্তমান ঘুমে রেখেছি লুকায়ে সব; এত যে প্রণয়খেলা সেই কোন কবে- ভুলি নাই কিছু তার, পৃথিবীর বিচিত্র বৈভবে রেখেছি সরায়ে শুধু-দু:সহ সুখস্মৃতি-সুখস্বপ্ন ভ্রমে।'----------অসাধারণ

২৬ মার্চ - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪